ল্যাটিন আমেরিকার কয়েকটি কবিতার অনুবাদ এবং অনুবাদ সংক্রান্ত দু চার কথা:-- পর্ব ৫
পর্ব: ৫
তাপস গুপ্ত
পুয়ের্তরিকো র ক্যারোলিনা শহরের এক মধ্যস্থ চাষী পরিবারে জুলিয়া ডি বার্গোস ১৯১৪ সালে জন্ম নিয়েছিলেন। ৩৫ হাজার বর্গ মাইল জুড়ে এই ক্যারিবিয়ান দ্বীপের পূর্ব নাম ছিল বোরিন কুয়ান, তখন এখানে শিকারি টেনো ইন্ডিয়ান দের বাস।১৪৯৩ কলম্বাসের পা ধরে ধরে আন্দালুসিয়ার স্প্যানিশরা যখন নিজেদের ভাষা সংস্কৃতি কে এখানে নিয়ে এল তখন এর নাম বদলে হয়ে গেল পুয়ার্ত রিকো স্প্যানিশ ভাষায় যার অর্থ "সমৃদ্ধ বন্দর"। আফ্রো ক্যারিবিয়ান এবং স্প্যানিশ সংস্কৃতির মিশ্রণে এই প্রাণবন্ত দেশটির সার্বভৌমত্ব আমেরিকার হতে চলে যায়১৮৯৮ সালে। ১৯২০ সালে র পর থেকেই আমেরিকা অর্থ নৈতিক সাম্রাজ্যবাদের বিস্তারে প্রচুর পুঁজির বিনিয়োগ ঘটাতে শুরু করে এই ছোট্টদ্বীপরাষ্ট্রটিতে।এখানকারঅধিবাসীরা আমেরিকার নাগরিকত্ব বহন করলেও প্রেসিডেন্ট নির্বাচন থেকে তাদের কৌশলে বঞ্চিত রাখা হয়েছে।
এই নাগরিক অধিকার নিয়ে আমৃত্যু লড়াই করে গেছেন জুলিয়া ডি বার্গোস। সচেতন নাগরিক গড়ে তোলার অন্তঃস্থ তাগিদ থেকেই গ্র্যাজুয়েশনের পর তিনি পেশা হিসেবে শিক্ষকতা বেছে নিয়েছিলেন। সামাজিক জীবনে এক আপাত কঠিন বর্মে নিজেকে আচ্ছাদিত রাখলেও তাঁর কবিতায় গীতিমূর্ছনা়র ঘূর্ণাবর্ত সেই কাঠিন্য প্রাচীরে বারংবার ধাক্কায় দ্বন্দ্ব সুন্দর হয়ে উঠেছে। তাঁর কবিতাকে অনেকেই বলেছেন স্বতস্ফূর্ত বহমান নদীর মত সজীব গতিশীল। এ প্রসঙ্গে কবি নিজেই বলেছেন," my childhood was all a poem in the river in the poem of my first dream."
তাঁর Sea wall কবিতা টির অনুবাদিত কবিতা টি এখানে দিলাম:
Sea wall
I'm going to make a seawall
with my small happiness. . .
I don't want the sea to know
that pains go through my breast.
I don't want the sea to touch
the shore of my earth . . .
I have run out of dreams,
crazy from shadows in the sand.
I don't want the sea to look
at blue mourning in my path . . .
(My eyelids were auroras
when the storm crossed!)
I don't want the sea to cry
a new rainstorm at my door . . .
All the eyes of the wind
already cry me as dead.
I'm going to make a seawall
with my small happiness,
light happiness of knowing myself,
mind the hand that closes.
I don't want the sea to arrive
at the thirst of my poem,
blind in the middle of light,
broken in the middle of an absence
সমুদ্র দেয়াল/ Sea Wall
Julia de Burgos (1914...1953)
সাগর পাড়ে দেয়াল তুলি সুখের স্বর্গ ছিঁড়ে
চাই না ঢেউয়ে ক্ষতের দোলা
হৃদয় পিষেই সাগর ভোলা,
শুকনো ভূমি বিরহ দাহে
শুরুতেই শেষ স্বপ্ন পোড়ে,
মত্ত বায়ু বালুকা জুড়ে
9দিশেহারা ছায়া যুদ্ধে হারে,
তাই সাগরেই থাক মৃত নীল সমুদ্র শোক
চোখের পাতায় জুড়ে ঊষা কাল
কাঙাল পাগল হয়
এবার ভোর হোক।
তোমার কাঁদুনে গীতে
সাবধানে দূরত্ব বজায়,
নতুন তরঙ্গ বর্ষণ দাপটে মাতে
চৌকাঠে দরজায়,
বাতাসের চোখ গুলো মৃত অবিশ্বাসে
আশ্চর্য দৃষ্টি ভাবনায়।
সুখের পাথর কুঁদে দেয়াল গেঁথেছি
কিনারা ঘেঁষে,
তোমাকে চাই না তুচ্ছ শর্তে
অথবা শুধু ফাঁকা ভালোবেসে।
কাব্যের তৃষ্ণার্ত শোষণ লেহনে
সমুদ্র চাই না আর,
দেয়াল পারে অন্ধ ভাষা
ফিকে অথবা উজ্জ্বল
তোমার গরহাজিরায়।
কবির আর একটি অনুবাদিত কবিতা দিলাম…
Bitter Song
Nothing troubles my being, but I am sad.
Something slow and dark strikes me,
though just behind this agony,
I have held the stars in my hand.
It must be the caress of the useless,
the unending sadness of being a poet,
of singing and singing, without breaking
the greatest tragedy of existence.
To be and not want to be … that’s the motto,
the battle that exhausts all expectation,
to find, when the soul is almost dead,
that the miserable body still has strength.
Forgive me, oh love, if I do not name you!
Apart from your song I am dry wing.
Death and I sleep together . . .
Only when I sing to you, I awake
দুঃসহ গান/(Bitter song)
Julia D burgos
বিড়ম্বিত নয় এ জীবন
তবু থাকে বিষাদ শিথিল আঁধার
ছুটে আসা যন্ত্রণা পিছে
যদিও মুঠোয় ধরা আকাশলীনা
সে যত্ন মিছে অনন্ত বিষাদময়
শোক সঙ্গীত শ্রবণে শুধু কবি
মহান কিছুই নয় পরিণতি
অস্তিত্বে থাকে করুন ছবি
চাও বা না চাও লক্ষ্য স্থির
যুদ্ধ ক্লান্ত ইচ্ছের সংঘাত
কাটা কুটিতে আত্মা মৃত
বেচারা শরীর চায় শক্তির অনুপাত
হে প্রেম ভালোবাসা তুমি মাফ কর
সুরের আকাশ ছাড়া মৃত্যু অথবা মরণ
ওই মূর্ছনায় পুনরায় ঘটে জাগরণ।
(ক্রমশ)
Comments