top of page
Search

বছরের প্রথম দিনে ।। রম্য রচনা ।। প্রদীপ দে


বাবুসাব ফাঁস গিয়া তো ?

প্রদীপ দে



-- হ্যাঁগো তুমি কোথায় এদিক -ওদিক হুটহাট চলে যাও - তা বলো না কেন?



-- কেন এইতো পাশেই ছিলাম। সিগারেটের অনুসন্ধানে ছিলাম।

-- না ঠিক আছে। চলো বাড়ি যাই। সন্ধ্যা নামছে।

-- তাতে কি হল? সন্ধ্যা বেলাতেই তো লেকে বেশি মজার।

-- এই ব্যাপারখানা কি বলোতো? তোমার বন্ধুরা এই বয়সে মরে পচে গেল!আর তুমি কিনা এই বয়সে লেকে সন্ধ্যায় এসে ফুর্তি করতে চাইছো? লজ্জা করে না? আমি চললেম।

গিন্নি আমার থেকে ছোট। কিন্তু রসহীনা । প্রকৃতি বোঝেনা, রোমান্স করতে জানে না। জন্ম, খাওয়া, ঘুম আর মরা -এই বৃত্তের জীবন ওর।বয়সে কি আসে যায়?মনটাই সব শরীরটাকে শুধু দাঁড় করিয়ে রাখো নেতিয়ে যেন না পড়ে নেতিয়ে পড়লেই রোমান্স শেষ!

গিন্নি মুখ ভেঙছে , আমার মরা মা বাপের নামে খিস্তি দিয়ে বাড়ির দিকে টানা হাঁটা দিল।




আমি মন খারাপ করার সু্যোগ পেলাম না তার আগেই একেবারে মনের মতনই এক অল্পবয়সী বিবাহিতা আমার সামনে এসে হেসে লুটিয়ে পড়লো!

-- কি দাদা, বৌদি বুঝি রাগ করে চলে গেল? দুঃখ করবেন না। আমিও একা,চলুন না বেঞ্চে বসে একটু আলাপ করি।

মনটা আমার জুড়িয়ে গেল …বসে পড়লাম। যুবতী বসেই কাছে এগিয়ে আসতে লাগলো। গল্প কাকে বলে? আমি মনের কথা দুঃখের কথা বকেই যাচ্ছি ও স্বান্তনা দিয়েই যাচ্ছে।



দুজনায় ঘনিষ্ঠ। দিশাহারা। দেহতত্ব! যুবতী তার উপর আবার পরস্ত্রী আমাকে তার একান্তই নিজের শরীর ছেড়ে দিয়েছে। আমি তো কোন ছাড় এইরকম পরিস্থিতিতে কোন দেবতাই নিজেকে ধরে রাখতে পারবে না, আমি গ্যারান্টি দিতে পারি। আমিও পারলাম না। সে এক বিশ্রী অবস্থা !





পরস্ত্রী ছিটকে উঠে পড়লো,

-- আমাকে এখুনি বাথরুমে যেতে হবে, বুঝতেই পারছেন? কিছু খরচ করুন এবার! আমি বুঝলাম। তবুও না বোঝার ভান করলাম।

এরকম ভাবে বেশিক্ষণ চললো না। বউটি আবার আরো রোমান্স করে উত্তেজনা ছড়িয়ে দিয়েই কেঁদে ভাসিয়ে দিল, -- আমার স্বামী আজ বাড়ি থেকে বার করে দিয়েছে। অন্য মহিলার সঙ্গে আছে। যদি কিছু টাকা দেন তাহলে কিছু খাবার কিনে আনি। পেটে খাবার দিলে আরো চাঙ্গা হব আমি, তবেই না …

আপাততঃ শ-পাঁচেক দিলেই হবে …

আমি পকেট থেকে ঝেড়েমুছে চারশত ষাট টাকা দিতে পারলাম। কারণ আমার লক্ষীর ভান্ডার যে গিন্নির বগলদাবায় !

যুবতী মুখ বেঁকিয়ে দিল,

-- এবাব্বা এতে কি হবে?

রাতে হোটেল ঘরভাড়া খাওয়ার খরচ তো দিতেই হবে। ঠিক আছে এখন এটাই দিন আমি একটু ফ্রেশ হয়েই আসছি …

আর ফেরার রাস্তা নেই। ইসপার নয় উসপার! গিন্নিকে আজ টাইট দিতেই হবে। ওকে আজ দেখিয়ে দেব আমার ক্ষমতা।

বিগলিত, রোমাঞ্চিত, পুলকিত, উদ্দীপিত আমি।

ট্রেলার শেষে হিট সিনেমা শুরু হওয়ার আগে ঠিক যেরকম অবস্থা হয় আমার অবস্থাও তথৈবচ।

বসে আছিতো আছিই। সময় বয়ে চলে। উত্তেজনা বাড়ে। আবার কমে। অধৈর্য হয়ে পড়লাম। রাত অনেক হল। সিকিউরিটি গার্ডের তৃতীয় হুইসেল বেজে গেল। সব ফাঁকা! আমি একা!

বেঞ্চি ছেড়ে দিতেই হল। গেটের দিকে পা বাড়ালাম। এখনও যদি ও আসে …

গেটম্যান ইয়াবড়া তালা ঝোলাতে ব্যস্ত, আমায় দেখে মোচওয়ালা মুখ নেড়ে হেসে দিল, …



-- কি বাবুসাব ফাঁস গিয়াতো?


হো - হো - হো ………


 
 
 

Comments


Subscribe Form

Thanks for submitting!

©2021 by Agantuk Potrika.

bottom of page