![](https://static.wixstatic.com/media/db19e5_d04843b101ac41e6a914c9467c114eb6~mv2.jpeg/v1/fill/w_980,h_590,al_c,q_85,usm_0.66_1.00_0.01,enc_auto/db19e5_d04843b101ac41e6a914c9467c114eb6~mv2.jpeg)
মুখাবয়ব
রিয়া মিত্র
সকাল থেকেই আকাশের মুখটা থমথমে৷ যখন তখন বৃষ্টি নামতে পারে। উত্তুরে হাওয়া ভিতরে ভিতরে কাঁপুনি ধরিয়ে দিচ্ছে অভিনবর৷ সর্বানী রাত্রে নামবে। প্রায় মধ্যরাতের ফ্লাইটে আসছে। অভিনবকে যেতে হবে আনতে৷ শহরে এখন নিরাপত্তা বলে কিছু নেই। ওলা, উবার বা প্রিপেড ট্যাক্সি কাউকেই ভরসা করে না অভিনব বা সর্বানী কেউই৷ এয়ারপোর্ট যেতে সাধারণত অভিনবর একঘণ্টাও লাগে না, তাও হাতে সময় নিয়ে বের হয়েছে অভিনব। সাড়ে দশটা বাজছে৷ এমনি আজ রবিবার, তাই শহরটা একটু ফাঁকা৷ ফোর্ড গাড়ীটা নিয়ে স্পীড তুললো অভিনব। দুপাশে ঘন জঙ্গল। রামদেওরা থেকে বাঁদিকে টার্ন নিলেই এয়ারপোর্টের রাস্তা৷ গাড়ীর স্পীডোমিটারের কাঁটা একশো দশের কাছে। অন্তত দশ-বারো কিলোমিটার দারুণ ফাঁকা রাস্তা৷ জঙ্গলের বুক চিরে যেন প্রাগৈতিহাসিক সরীসৃপের মত এঁকেবেঁকে গেছে রাস্তাটা৷
মাঝরাস্তাতেই ঠাণ্ডা ঝোড়ো হাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঝিরিঝিরি বৃষ্টি শুরু হয়ে গেল। জঙ্গলের ঝিঁঝিঁগুলো একটানা ডেকে চলেছে। হঠাৎ মনে হলো গাড়ির কাচের সামনে কোনো নারীর মুখাবয়ব ভেসে উঠল! কোনোরকমে গাড়ির স্টিয়ারিং সামলে গাড়ির স্পিড বাড়িয়ে দিল সে। থামাটা উচিত হবে না। এ রাস্তাটা এমনি ভালো না তবুও তাড়াতাড়ি হবে বলে এই রাস্তাটাই বেছে নিয়েছে অভিনব৷ অনেকেরই এ রাস্তায় নির্জন রাতে এমন কিছু অভিজ্ঞতা হয়েছে, যা খুব একটা সুখপ্রদ নয় বরং বেশ ভীতিপ্রদ!….
গাড়িটা স্পিড তুলেছে ঠিকই কিন্তু মনে হচ্ছে কেউ যেন পিছনে টানছে গাড়িটাকে। লুকিং-গ্লাসের দিকে চোখ পড়তেই পিঠ বেয়ে একটা হিমেল স্রোত নেমে গেল ওর, দেখল, ঠিক পিছনেই ঘাড়ের কাছে সর্বানীর ফ্যাকাশে মুখটা উল্টো করে শূন্যে ঝুলছে, চোখগুলো সাদা, মণিবিহীন, মুখে অসংখ্য কাটা-ছেঁড়া। খিলখিল করে হেসে সর্বানী বলল, "ফ্লাইট ক্র্যাশের খবরটা তুমি পাওনি বোধহয়। তাই, আমিই চলে এলাম তোমার কাছে।" লুকিং-গ্লাসে স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছে অভিনব, সর্বানীর হা-করা মুখটা ক্রমশ এগিয়ে আসছে অভিনবর ঘাড়ের কাছে....।
Comments