top of page
Search
agantukpotrika

বিশেষ সংখ্যা ।। ভয় ভৌতিকে ।। শুভঙ্কর ভট্টাচার্য 


দাঁত ভাঙা ভূত 


শুভঙ্কর ভট্টাচার্য 



অনেকদিন আগেকার কথা , একটি জঙ্গলে এক ভূত  বসবাস করতো । সে খুব ভালো ছিল, সবসময় কোনো মানুষ বিপদে পড়লে তার সাহায্যের জন্য এগিয়ে যেত । কোনো মানুষের কষ্টের কথা শুনলে সেও খুব দুঃখ পেত। কিন্তু ঠগবাজ, লোভী মানুষদের একদম পছন্দ করতো না । সে রেগে গেলেই অন্যদের  দাঁত ভেঙে দিত।



সেই জঙ্গল থেকে একটু দুরেই শান্তিপুর নামক স্থানে তপতী নামে এক লোভী মহিলা বসবাস করতো । সে কেবল অসৎ উপায়ে সাধারণ মানুষদের বোকা বানিয়ে তাদের থেকে টাকা আত্মসাত করতো ।এতে  মনে মনে খুব বুদ্ধিমান মনে করত । এই বদমাইশি কাজে তপতী কে সাহায্য করতো ওর পালোয়ান ভাই বিল্টু। বিল্টু একজন পালোয়ান ও খুব শক্তিশালী হওয়ায় তার সাথে শান্তিপুরের কোনো অধিবাসী পেরে উঠতোনা।



একদিন তপতী আর ওর ভাই বিল্টু বদমাইশি করে শান্তিপুর নামক স্থানের সাধারণ মানুষের ববহার কারী এবং পানীয় একমাত্র পুকুরে বিষ প্রয়োগ করলো । যার কিছু সময় পর থেকেই শান্তি পুরের পাশের জঙ্গলে থাকা নিরীহ পশুগুলো সেই জল খেয়ে এঁকে এঁকে মরতে শুরু করলো। জলের মধ্যে থাকা মাছ গুলিও মরতে শুরু করল ।মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই জঙ্গলের অধিকাংশ পশুই ও জলে থাকা সব মাছ মারা গেল ।



এইসব দেখে শান্তিপুরের সাধারণ মানুষেরা খুব চিন্তিত হয়ে পরলো, শান্তিপুরের অধিবাসীরা একদিন আলোচনাতে বসালো ।



রেখা: বললো আমাদের এখানে এ কি বিপদ এসে উপস্থিত হলো! 



বাবাই: বললো এই জল নিশচই কোনোভাবে বিষাক্ত হয়েছে; যার জন্যই  নিরীহ পশুগুলো ওই জল খেয়ে মরে গেল । এই জল আমরাও খেলে মারা যাবো ।



পিকাই: জানালো এখন আমরা এই জল আমাদের খেতেও চাষের কাজে লাগাতে পারবো না, এতে তো আমাদের খেতের সব শাক সব্জি নষ্ট হয়ে যাবে।



কেষ্ট: মাথা তে হাত দিয়ে হাঁউ হাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বললো এ আমাদের কি হলো এখন আমরা কি করে বাঁচব!!



ঠিক হলোও তাই জলের অভাবে সব শাক সব্জি নষ্ট হয়ে গেল, শান্তিপুরে এক গেল গেল রব শুরু হলো ।এমনকি সাধারণ মানুষেরা জল খেতে না পেরে তাঁরও অসুস্থ হতে শুরু করল।



এই পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে তপতী আর তার পালোয়ান ভাই বিল্টু বিভিন্ন আনাজ ও পানীয় জল অনেক বেশি দামে বিক্রি করা শুরু করল, শান্তিপুরের মানুষ জনও কোনো উপায় না দেখে অনেক বেশি দামেই সেই সমস্ত জিনিস কিনতে শুরু করল, এতে তপতী ও তার ভাই বিল্টু ধীরে ধীরে অনেক টাকার মালিক হয়ে উঠলো ।



একটা সময়ের পর সেই শান্তিপুরের মানুষজনের টাকা ফুরিয়ে আসতে শুরু করল, তাদের হাতে আনাজ আর জল খাওয়ার মতোও আর কোনো টাকা রইলো না। 



রিঙ্কি: নামে একটি মেয়ে  একদিন তপতী কে অনুরোধ করে বললো, দিদি আমার সমস্ত টাকা শেষ হয়ে গেছে বাবা শহরে কাজের জন্য গেছে বাবা শহর থেকে টাকা নিয়ে ফিরে এলে তোমার সমস্ত টাকা ফিরৎ দিয়ে দেব, সেই সময় আমার, মা আর ভাইয়ের জন্য যদি আনাজ ও পানীয় জল দাও তাহলে খুব সুবিধা হয় ।



তপতী: শুনে বললো তুই কি আমাকে বোকা ভেবেছিস, টাকা ছাড়া একটা জিনিস পাওয়া যাবে না আগে টাকা আন তার পর জিনিস পাবি।



তপতী: এই শুনে মনের দুঃখে সেখান থেকে বিদায় নেয় । সে ভাবে এই আমাদের এই বিপদে একমাত্র জঙ্গলের সেই ভালো ভূত  উদ্ধার করতে পারেন ।



তপতী: এরপর জঙ্গলের সেই ভূত  কে গিয়ে তাদের দুঃখ দুরাশার কথা খুলে বলে।



ভূত : সব শুনে বলে একটুও চিন্তা করো না, ওই তপতী আর ওর ভাই বিল্টু কে উচিত শিক্ষা দিতে হবে । 



ভূত  আর রিঙ্কি এরপরই তপতীর বাড়িতে যায় । 



ভূত : তপতী কে বলে আমি জানি মানুষদের বিপদের মধ্যে ফেলে তুই তাদের থেকে বোকা বানিয়ে টাকা লুটছিস তাঁরা তারি সব ফেরৎ দে বলছি ।



তপতী: শুনে হেসে বলে তুমি কি আমাকে ভয় দেখাচ্ছো, আমি এক টাকাও ফেরত দেবনা ,এই বলে ওর ভাই বিল্টু কে ডাক দেয়।



বিল্টু: এসে বলে কোথাকার এক ভূত  আমাদের ভয় দেখাতে এসেছ, তোমার এখনিই দেখ কি করি



এই বলে এগিয়ে যেতেই ভূত  এক ঘুষি তে বিল্টু র সব দাঁত ফেলে  দেয় ।



বিল্টু: কাঁদো কাঁদো গলায় বলে এ আমার কি যে হলো, আমার সব দাঁত পরে গেল ।



তপতী: রেগে পেত্নি র দিকে তেরে যেতে ভূত টি তারও দাঁত ঘুষি দিয়ে ফেলে দিল্ । তপতী তখন মাটিতে পরে গরাগরী খেতে লাগল ।



ভূত : তপতী আর ওর ভাই বিল্টু কে বললো তাঁরা তারি সবার টাকা ফিরৎ দিয়ে দে বলছি না হলে মহা বিপদে পারবি কিন্তু ।



কোনো কথা না বলে তপতী আর ওর ভাই বিল্টু শান্তি পুরের মানুষের সব টাকা ফিরৎ দিয়ে দিল।



তার পর সেই ভূত টি বিষাক্ত জলের পুকুরটাকে নিজের জাদু বলে আগের মতোই পানীয় উপযোগী করে দিল্ । 



 শান্তিপুরের মানুষজনের জীবনে আবার খুশির জোয়ার ফিরে এল, তারা সুখে শান্তিতে বসবাস শুরু করল ।আর সেই দাঁত ভাঙা ভূত টি জঙ্গলে ফিরে গেল ।।



       সমাপ্ত

8 views0 comments

Comments


bottom of page