top of page
Search

মহানবমী ।। বিশেষ সংখ্যা ।। ছোটগল্প - তাপস কুমার


অন্য রকম যুদ্ধ

তাপস কুমার


সবেমাত্র খেয়ে দুপুরের খাবার শেষ করে উপরে উঠে এলাম। গরমের দুপুরে এই সময় আমার কক্ষটা তৃপ্ত হয় বটে, কিন্তু আজ তার অন্যরূপ চোখে পরলো। সেটাই ভাবতে ভাবতে হঠাৎ দপ মতো শব্দ করে লাইনটা অফ হয়ে গেল। জানতে পারলাম লাইনটা চলে গেল ভরদুপুরে এত গাড় অন্ধকার হয় তা আজ জানতে পারলাম। সবেমাত্র খেয়ে বিছানায় পড়লাম সেটা যে স্বল্পক্ষণ হবে জানা ছিল না এই অন্ধকারের জন্য। ঘরটা আলোকিত করতে যে জানালা খুলতে যাব মন সায় দিলো শরীরটা বিপরীত কথা বলে কোন উপায় না থাকায়....। জানলাটা খুলে যা দেখলাম বিবিসিকা চেয়েও না।



আকাশটা গাঢ় অন্ধকার সবেমাত্র আচ্ছন্ন করেছে, দক্ষিণ প্রান্তে বিদ্যুতের নাচন চলছে তা দেখতে ভয় লাগলো চোখেকে ধাঁধিয়ে যায়।এই মুগ্ধতা দেখতে দেখতে খুব কাছে কোন এক প্রান্তে সশব্দে বিদ্যুৎ পড়ায় পুরো স্টেশন চত্বর নিমেষের মধ্যে আলোকিত করে তুলল সাথে আমার কক্ষ টাও।সময় তখন দেখে বোঝা যাচ্ছিল না সেটা সকাল গড়িয়ে দুপুর এ পড়েছে। মাঝেমধ্যে সে আলোর ঝলকানি আমার শহরটাকে কিছুক্ষণের জন্য হোক আলো এবং আওয়াজে ভরিয়ে তুলেছে।

এইসব প্রকৃতিক পরিবেশন উপভোগ করতে করতে হঠাৎ চোখে পড়ল এক মানব মূর্তি। সেটা যে একটা মেয়ে বিদ্যুতের আলোতে বুঝতে বিলম্ব হলো না হাতে তার খুব জোর 8 থেকে 9 মাসের শিশু। কথার থেকে একটা কালো তিরপাল পেয়েছে বোধহয় যেটা দিয়ে তার এই কলের শিশুটাকে ঢেকে রেখেছে, যাতে বৃষ্টির একটা কনাও তার দেহকে না স্পর্শ করতে পারে। উপরন্তু বৃষ্টি তার শিশুটাকে ভেজানোর জন্য আপ্রাণ চেষ্টা করছে। এরই সাহায্য করছে তারই দমকা হাওয়া। প্রকৃতির সাথে মায়ের এই যুদ্ধ খুব কমই দেখতে পাওয়া যায়। যেমনটা সেইবার মোজাফফরপুর স্টেশনে দেখা গিয়েছিল। চিরকালের জন্য শয্যাশায়ী মায়ের সাথে লুক চুরি খেলা সেই কোমল শিশু।

এদিকে মা নিজেকে ভুলে শিশুটাকে বাঁচানোর তাগিদে এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্ত ছুটে বেড়াচ্ছে, হয়তো সে ভুলে গেছে লকডাউন এর প্রভাব এখানে। সেটা আমি কাগজে পড়েছিলাম সেটা আমাকে ভিতর থেকে নাড়িয়ে তুলেছিল। খুবই মর্মান্তিক এইসব ঘটনা প্রতিটা মায়ের মধ্যে একটা যোদ্ধা গুন লুকিয়ে থাকে।

" বাবু জানলাটা বন্ধ করে দে খুব জোর ঝড় আসছে"।

6 views0 comments
bottom of page