বাংলার শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো, এই উৎসব বহুবছরের প্রাচীন। ভবিষ্যপুরাণে রয়েছে যে, যে দেশে দেবীর পুজো হয় সেই দেশে দুর্ভিক্ষ হয় না, কেউ কোন দুঃখ পায় না বা কারও অকালমৃত্যুও হয় না।
সৌভিক রাজ
সিংহবাহিনী মাতৃ শক্তির পুজো বহুরূপে বহুদিন ধরেই হয়ে আসছে,যেমন বসন্তে বাসন্তী পুজো,কার্তিকে জগৎধাত্রী পুজো কিন্তু শরৎকালে রামচন্দ্র দেবী দুর্গার আরাধনা করেছিলেন অর্থাৎ অকাল বোধন করেছিলেন রাবনকে পরাজিত করার জন্যে,মহিষাসুরমর্দিনী মা আস্তে আস্তে কালের নিয়ে হয়ে উঠলেন পরিবার নিয়ে বাপের বাড়ি আসা মেয়ে, আজ দুর্গা পুজো সব কিছু ছাপিয়ে লৌকিক উৎসবে পরিণত হয়েছে। কৃত্যচিন্তামণি গ্রন্থে রয়েছে-‘পূজিতা সুরথেনাদৌ দুর্গা দুর্গতিনাশিনী।তৎপশ্চাদ্রামচন্দ্রেণ রাবণস্য বধাথিনা।’ অর্থাৎ মহারাজা সুরথ প্রথমে দুর্গতিনাশিনী দুর্গার পুজো করেছিলেন তারপর রাবণকে বধ করতে শ্রীরামচন্দ্র দেবীর পূজা করেছিলেন।
পলাশীর যুদ্ধ জয় উদযাপন করতে শোভাবাজারের পুজো শুরু সেখান থেকে হুগলির গুপ্তিপাড়া হয়ে আজ শারদীয়া ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায়! তাই বলাবাহুল্য দেবী দশভূজা মহিষাসুরমর্দিনীর আরাধনা বঙ্গে বহুদিনের।
শরৎকালে বোধন হয়েছিলো বলে পুজোর নাম শারদীয়া আর বোধন যখন হয়েছে তার বিসর্জন হতেই হবে!
সূর্যের উপর নির্ভর করে আমাদের হিন্দু দিনলিপি অনুযায়ী বছর দুটি ভাগে বিভক্ত যথা উত্তরায়ণ এবং দক্ষিণায়ন, শ্রাবণ থেকে পৌষ পর্যন্ত চলে এই দক্ষিণায়ন। এই সময়কাল হলো রাত্রিকাল দেবতাদের ঘুমানোর সময় তাই এই সময়ে পুজো করার জন্যে বোধনের প্রয়োজন হয়। ষষ্ঠীতে বেল তলায় বোধনে মাকে আহ্বান করা হয় এবং সব শেষে দশমী তিথিতে অপরাজিতা পুজো এবং দর্পনে সমাপ্ত হয় শারদীয়া। এই দশমী তিথির পরেই শুরু হয় আরেক পুজো। যা শুনতে সত্যিই অবাক করার মত। দশমী পুজোয় দেবী দুর্গার বিসর্জনের পর হয় অপরাজিতা পুজো।
(ক্রমশ...)
Comments