পাঁচিল
স্বপ্না মজুমদার হতে পারি ইঁটে তৈরি,হতে পারি তার কাঁটায় কিম্বা ওই বাঁশের চটায়, জন্ম আমার হয় ঠিকই,রাখো আমায় অবহেলায়, দুটি দেশের মাঝে আমি, দাঁড়িয়ে দেখি সবকিছু দায়িত্ব সহ করছি পালন,দেশ সীমান্ত সুরক্ষা কর্তব্যটুকু, তার কাঁটায় খোঁচা মেরে বুঝিয়ে দিই,ক্ষমতা আমার, কখনো আমি ইঁটের গাঁথুনিতে,পাঁচিল নামটি পরিচিত এভাবেই থাকি আমি রাস্তা ধারে,অথবা বাড়ির সামনে অবিরত, মর্যাদা জানি আমি,আব্রু রাখি বাড়ির আভিজাত্যের, দিই না যেতে টপকে কখনো,যেকোনো মানুষকে বাড়ির ভিতর কুকুর,ছাগল আটকে ফেলি,তবুও কখনো দুষ্ট কেউ ঢুকে পড়ে, সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে থাকি,কি বা আমার করার থাকে! রাস্তা ধারে পাঁচিল ঘেসে আছে শুয়ে গরীবেরা মশারী টানায় পেরেক পোঁতে,পাঁজড়ে আমার কষ্ট হয়, চুপ থেকে সহ্য করি,ভাবি,, ঘুমাক ওরা শান্তিতে, কতো যে পাঁচিলে রাজনৈতিক স্লোগান,লেখে আমার মুখটিতে কখনো আবার বিজ্ঞাপনের হিড়িক,যথেচ্ছচার অত্যাচার করে চেহারা আমার জৌলুস হারায়, পরিস্কার ওরা করে না যে, কখনো আবার রাত আঁধারে করে কু- কর্ম,নয় ধর্ষণ পাঁচিল আড়াল খোঁজে ওরা,বারণ করি প্রতিবাদে, শোনে না ওই পশুগুলো, যা খুশি তাই করে চলে সাক্ষী আমি থাকি শুধু,কে বোঝে আমার মনের কথা হতে পারি পাঁচিল আমি,আমারও আছে সন্মানটা! যত্ন আমার কেউ করে না,গড়েই শুধু ফেলে রাখে সিমেন্ট,বালি ভাগ হিসেব, ভীষন কমে মিলে থাকে হঠাৎ যখন এক নাগাড়ে বর্ষা চলে, কমজোরি হয়ে পড়ি কিম্বা হয়তো ফাটল ধরে,নড়বরে জীবন আমার, কেউ বোঝে না বয়সও তো আমারও হয়! গাছ গাছালি জ্বালায় বড়ো আমার গায়ে জন্ম নেয় হয়তো তখন ভেঙে পড়ি,চাপা পড়ে ঘেসা বস্তি বাড়ি দোষ তখন আমারই শুধু দাও,কেনো আমি শক্ত নই! কান্না পায় ওদের কথায়, পত্রকাররা যা খুশি ছাপায় যখন আমার ভরা যৌবন,আসেনি তুলতে একটাও ছবি এখন আমার জীর্ণ দশা,তুলছে ছবি,ছাপছে কাগজে,
লজ্জা হয় নিজেকে দেখে এতো আমি, কুৎসিত না কি! এর চেয়ে তো ওটাই ভালো,বাঁশের চটায় গড়ো যখন মন্দ নয়,হয়তো কমজোরি,মেরামত করলেই হলো! গরীব ঘরে শোভা আমি,বেশ আদরে রাখে আমায়, থেকে থেকে কালো রঙে,আমায় ওরা কি যে বানায়, সুন্দর একটু রঙ দিলে বেশ সুন্দর লাগতে পারি, বোঝে না গো,কেউ বোঝেনা এভাবেই দুঃখে মরি! সেদিন এক বাড়ির মালিক বানালো আমায় মার্বেলে কি সুন্দর দেখতে হলাম, খুশিতে আমি ঝলমলে! খুব ভালো ওরা, জানো,যত্ন করে মাঝেমধ্যে জৌলুস আমার বেড়েই চলে,পাঁচিল আমি মার্বেলে।।
Kommentare