top of page
Search

২৮শে মার্চ সংখ্যা ।। অণুগল্প ।। প্রদীপ দে


মনের জমা ঝুল

প্রদীপ দে


সেদিন রবিবার। দরজায় করাঘাত হল। আমি অবাক চোখে দেখলাম তাম্বুলী বাইরে দাঁড়িয়ে।

অনেকদিন বাদ তাম্বুলী ফিরে এল। ফিরে এল একেবারে আটপৌরে সাজে। তাঁতের শাড়িতে, কপালে লাল টিপ আর চওড়া সিঁথি ভর্তির সিঁদুরে।


আমি দরজা খুলে অবাক। অসুস্থতা কাটিয়ে দেওয়া ওর আগমন আমাকে সুস্থতার বারিধারায় যেন উজ্জীবিত করলো। হাসি দিয়ে ওর অভ্যর্থনা সারলাম।


তাম্বুলী এসেই একমুঠো আহ্লাদ ছড়িয়ে জানালো -- কেমন আছো দেখতেই আচমকাই চলে এলুম।


-- এইতো আছি শরীরে। মন মরে গেছে।একরাশ অভাব আর খিদেকে সম্বল করে।


-- বাঃ ভালো বললে এই না হলে কবি!


আমি উত্তর দেওয়া বা না দেওয়ার অনুভূতি ওর নেই। ও সোজা রান্নঘরে সেঁদিয়ে চা বানাতে লাগলো। ওকে কিছু দেখানোর নেই, ও আমার সব জানে।

আমি সিগারেট ধরালাম। ও দুটো কাপে চা নিয়ে ঘরে ঢুকলো। আমি কায়দা করে সিগারেটের ধোঁয়া ওর মুখের সামনে ছাড়লাম।


ও বললে -- সিগারেট কেন খাও?


-- ওহঃ দুঃখিত। গন্ধ ভালো লাগছে না? না?


-- তুমি ভালোই জানো আমি গন্ধটা ভালোবাসি। কিন্তু তুমি লেবেলে সতর্কীকরণটা দেখোনা? এটা ক্যান্সারের কারণ!


-- ও তাই বলো? আচ্ছা তুমিতো রোজ গীতা পড়ো,ওর সকল বানী কি তুমি মেনে চলো ?


চা খেয়ে তাম্বুলী বিছানায় শুয়ে পড়লো, উত্তর এড়িয়ে।। শাড়ি অবিন্যস্ত হয়ে যাওয়ায় ওর অনাবৃত শরীর বেশ মোহময় করে তুললো আমায়।

ঘরের মাথায় সিলিংয়ের দিকে তাকিয়ে আচমকা ও প্রশ্ন করে বসলো -- ঘরের ঝুল কে ঝাড়ে ?


-- কেন আমি নিজেই।


দেখলাম ও একটু চিন্তায় পড়ে গেল সারা ঘর ভালো করে নিরীক্ষণ করলো। বোঝবার চেষ্টা করলো কোথাও অপরিচ্ছন্নতার ছাপ আছে কিনা!

হয়তো ও তাই ভেবেছিল।


--সাবধানে এসব করো,মাথায়- চোখে ঝুল যেন না পড়ে!


আমি হেসে ফেললাম, একটা প্রশ্ন রাখলাম -- আচ্ছা মনের ভিতর জমে থাকা অদৃশ্য ঝুলের কি হবে?

--------------------



 
 
 

Comments


Subscribe Form

Thanks for submitting!

©2021 by Agantuk Potrika.

bottom of page