top of page
Search

অণুগল্পে তনিমা সাহা


ওই রাতে

তনিমা সাহা


রিভু এক বনেদি বাড়ির ছেলে। কলেজে পড়ার পাশাপাশি থিয়েটারও করে। পুরোনো বাঙালি কৃষ্টি-কালচারের মতো রিভুদের বাড়িতেও হাজারো সংস্কার-কুসংস্কার আছে। 

রিভু এই বাঁধা-নিষেধের ঘেরাটোপে হাঁপিয়ে ওঠে। আজ রিভুর নাটক আছে থিয়েটারপাড়ায়। এই একটা জায়গাতেই রিভু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে পারে। বাড়ি থেকে বেরোনোর সময় মা প্রথমে 'এইদিকে যাবি না, ওই জিনিস ছুঁবি না' এসবের একটা লম্বা ফিরিস্তি দিয়ে তারপর বাঁ'হাতের কড়ে আঙ্গুলের নখ দাঁত দিয়ে কেটে 'যেতে নেই বাবা, যেতে নেই' বলে ছেলেকে ছাড়লেন। রাস্তায় এসে রিভুও যেন হাঁপ ছেড়ে বাঁচলো বাড়ির এই দমবদ্ধ পরিবেশ থেকে। মাঝেমাঝে রিভু ভাবে আজকের এই ডিজিটাল জগতে তার পরিবার কোন কূঁয়োতেই এখনো আটকে আছে। নাটক শেষ হতে বেশ রাত হয়ে গিয়েছিল। এক বন্ধু লিফ্ট দিয়ে পাড়ার সামনে নামিয়ে দিল রিভুকে। এদিকে পাড়ায় তখন লোডশেডিং…কিচ্ছু দেখা যাচ্ছে না। চেনা জায়গা...তাই অন্ধকারে হাঁটতে অসুবিধা হচ্ছেনা। 

হঠাৎই কানের কাছে খুব জোড়ালো আওয়াজে 'ম্যাঁয়াআও' শব্দে ভড়কে গিয়ে দু'পা পিছিয়ে এলো রিভু। ঠিক তখনই ঝপ্ করে ইলেক্ট্রিসিটি আসায় রাস্তার আলো জ্বলে উঠতেই রিভু দেখে একটা কালো কুচকুচে বেড়াল তার পথ আটকে দাঁড়িয়ে রয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তার মায়ের নিষেধাজ্ঞা মনে পরলো…."বাবু কালোবেড়াল সামনে দিয়ে রাস্তা পার করলে একটু অপেক্ষা করে রাস্তাটা পার হবি"। 

বেড়ালটি চলে যাওয়ার পর রিভুর চোখ পরলো ঢাকনা খোলা ম্যানহোলেটায়। আর এক'পা এগুলেই সে সোজা গিয়ে পরতো ম্যানহোলটায়। মনেমনে সে ভাবলো, "বোধহয় সব বাঁধাই অযৌক্তিক নয়"।

 
 
 

Comments


Subscribe Form

Thanks for submitting!

©2021 by Agantuk Potrika.

bottom of page